বিবরণ
চরিতগ্রন্থে পরিকর-অনুগামীরা ভগবান নামিয়ে আনলেন নবদ্বীপের বুকে। বাল্যলীলার পর যৌবন বয়সে লড়াকু, বদরাগী, শ্রেণিবৈষম্য না মানা নিমাই পন্ডিত ব্রাহ্মণ্যবাদের সঙ্গে যুঝতে না পেরে নবদ্বীপ ছাড়া হলেন। নিলেন ভেক। সন্ন্যাস। ভক্তিধর্মের শ্রেণি সংগ্রামের সুর তুলে চললেন আধ্যাত্মবাদের দেশ নীলাচল। পেলেন গুরুত্বপূর্ণ অনুগামী-পরিকর। যাঁদের সিংহভাগই উচ্চকোটির সংস্কৃতির। নিম্নবর্গীয় জনতা-জনার্দনের সঙ্গে সংযোগ ক্রমে ক্রমে একেবারেই ছিন্ন হল। তাঁকে ঘিরে রাজা, সংস্কৃতঙ্গ, প্রশাসনিক স্তরের মেধাসম্পন্ন লোকজন। এদিকে নবদ্বীপ তথা গোটা বাংলায় চৈতন্যধর্মে বিরোধ। বৈষ্ণবদের হাজার স্রোত-উপস্রোত-আউল-বাউল-নেড়া-দরবেশ-সাঁই। কায়াবাদীর যুগল ভজনা-সাধন সঙ্গিনী, বৈষ্ণবী। কারো সঙ্গেই কারও বনিবনা নেই। তারই ভিতর নাম বিলোচ্ছেন নিত্যানন্দ প্রভু। বাতিল, বুড়ো অদ্বৈত ঠাকুর মানতে না পেরে চিঠি লিখছেন নীলাচলে। চৈরন্যদেব তখন নিজেই চক্রান্তের শিকার। অসহায়। কর্মহীন। রাজশক্তি আর ব্রাহ্মণ্যবাদের কাছে আবারও পরাস্ত তিনি। চলে গেলেন অন্তরালে। রহস্যে আবৃত সেই জীবনেই এই গবেষণা নতুন এক আলো। চৈতন্যজীবনী ও সমসাময়িক প্রেক্ষিত ধরে লেখক টান মেরেছেন অতীত। সঙ্গস্কৃত-বাংলা-ওড়িয়া-অসমীয়া পুথি ও চরিত গ্রন্থের পরীক্ষা-নিরীক্ষায়। দীর্ঘ ৫ বছরের গবেষণার ফসল এটি।